,

বঙ্গবন্ধুর অনেক স্মৃতি বয়ে বেড়ানো বাঘিয়ার ও হিজল গাছ

বাদল সাহা, গোপালগঞ্জ: হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার জন্ম না হলে পৃথিবীর মানচিত্রে স্থান পেত না লাল সবুজের স্বাধীন বাংলাদেশ। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারের হত্যা করা হয়। নেমে আসে শোকের জোয়ার, এ শোক যেন বাঙ্গালী জাতির মনে চিরদিনের।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৌত্রিক বাড়ীর পিছন দিয়ে বয়ে যাচ্ছে বাঘিয়ার খাল। আর খালের পাশে এখনো দাঁড়িয়ে আছে হিজল গাছ। বঙ্গবন্ধুর গোসল আর সময় কাটানোর অনেক স্মৃতি বয়ে বেড়াছে বাঘিয়ার খাল ও হিজল গাছটি। কিন্তু, শুধু নেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গলী বঙ্গবন্ধু।
টুঙ্গিপাড়া গিয়ে জানাগেছে, ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ছোট বেলা মা বাবা আদর করে ডাকতেন খোকা নামে। দূরন্তপানায় ছিল সবার থেকে অনন্য। বাড়ীর পিছন দিক দিয়ে বয়ে যাওয়া বাঘিয়ার খালে করতেন গোসল। সাথে থাকতেন সমবয়সীরা। দূরন্তপনায় যেন হার মেনে যেত খালের স্রোতও। এ থেকে বাদ পরতো না হিজল গাছটিও। সমবয়সীদের সাথে নিয়ে গাছে উঠে খালের মাঝে করতেন লাফালাফি।
বড় হয়ে রাজনৈতিক জীবনে প্রবেশ করলেও টুঙ্গিপাড়ায় আসলে বিভিন্ন কাজের জন্য এখান থেকেই নৌকায় বের হতেন বঙ্গবন্ধু। এলাকার মানুষ আর বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতেন এখানেই। বঙ্গবন্ধু না থাকলেও সেই বাঘিয়ার খাল আর হিজল গাছটি আজও নানা স্মৃতির সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
শুধু বঙ্গবন্ধুই নয় এ খালে (বর্তমানে বাধানো ঘাট) তার বড় কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ছোট কন্যা শেখ রেহানাও গোসল করতেন ছোট বেলায়। সাঁতার আর ডুব সাঁতার কাটতেন তারা।
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধরে রাখতে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির পার্শ্ববর্তী খালের পাড় ও হিজল গাছের চারপাশ বাঁধাই করা হয়েছে। প্রতিদিনই জাতির জনকের স্মৃতিবিজরিত হিজল তলাসহ খালটি পরিদর্শনে আসেন শত শত বঙ্গবন্ধুপ্রেমীরা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা বয়সের দর্শনার্থীরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে এসে অনুভব করেন বঙ্গবন্ধুর জীবনযাত্রা।
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত সেই খাল পাড় ও হিজল গাছটি দাঁড়িয়ে আছে এখনো। নানা স্মৃতি বহন করে বছরের পর পর আপেক্ষায় রয়েছে বঙ্গবন্ধুর। কিন্তু নেই বঙ্গবন্ধু, আছে শুধু তার স্মৃতি।
দর্শনার্থীরা জানান, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থাপতি বঙ্গবন্ধুকে দেখিনি, কিন্তু টুঙ্গিপাড়ায় তার অনেক স্মৃতি রয়েছে। তাই এখানে এসে বঙ্গবন্ধুর আদি পৈতৃক বাড়ি, ছেলেবেলার খেলার মাঠ, বঙ্গবন্ধুর প্রিয় বালিশা আমগাছ, হিজলতলাসহ বিভিন্ন স্মৃতি ঘুরে ঘুরে দেখছি। যতই দেখছি ততই অন্যরকম একটা অনুভ‚তি উপলব্ধি করছি।
এলাকাবাসী শেখ লুৎফর (৫৯), মো: আবু তাহের (৬৫) জানান, বাপ দাদাদের কাছে শুনেছি ছোট বেলায় বঙ্গবন্ধু এ খালে গোসল করতে। সাথে সাথের সমবয়সীরা। দুষ্টমি আর দূরন্তপনার মধ্য দিয়ে গোসল করতেন। এসময় তিনি এই হিজল গাছে উছে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়তেন।
বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য ও টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ আহমেদ হোসেন মীর্জা জানান, বঙ্গবন্ধু ছোট বেলায় ছিল দুষ্ট প্রতিকৃতির। কিন্তু মানুষের দু:খ কষ্ট সইতে পারতেন না। সমবয়সীদের সাথে এ খালে গোসল করতেন। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি আর পদচিহ্ন ধরে রাখার জন্য বাঘিয়ার খাল পাড় ও হিজল গাছের চারপাশ বাঁধাই করে সংরক্ষন করা হয়েছে। যাতে বঙ্গবন্ধু প্রেমীরা বঙ্গবন্ধুর ছোটবেলা অনুভব করতে পারে। #

এই বিভাগের আরও খবর